1. live@www.paharerkantho.online : পাহাড়ের কন্ঠ : পাহাড়ের কন্ঠ
  2. info@www.paharerkantho.online : পাহাড়ের কন্ঠ :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
অতীতকে ঘিরে প্রতিশোধ নয়, ভবিষ্যতের জন্য অধিকার চাই/ এই সহজ বিষয়টি বুঝতে ব্যার্থ— সন্তু লারমা কি সত্যিই নেতৃত্বের যোগ্য ? সন্তু লারমা ও তার নেতৃত্বাধীন একক আধিপত্যবাদী রাজনীতি এক প্রকার স্বৈরাচারীতন্ত্রের রূপ নিয়েছে প্রজ্ঞা চাকমা নামের সেই শিশুটির প্রশ্ন ইতিহাসকে নাড়া দেবে,  (সন্তু লারমা) তোমার ক্ষমা নেই। সন্তু নিজেও আন্দোলন করবে না,অন্যদেরও করতে দেবে না জেএসএস’র গুলিতে এক শিশু আহত হওয়ার ঘটনায় চার সংগঠনে নিন্দা ; সংঘাত বন্ধের আহবান বাঘাইছড়িতে সন্তু গ্রুপের সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৫ বছর বয়সী এক শিশু আহত জেএসএসকে আর স্থান দেবে না ভারতীয় চাকমা সমাজ গুইমারায় এক পাহাড়ি গৃহবধুকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ জেএসএস কর্মীদের সুমতি ফিরুক বিশ্ব পরিবেশ দিবস ডাকে ও সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের বিরুদ্ধে রামগড়ে র‌্যালি ও সমাবেশ।

বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু উপলক্ষে মাটিরাঙ্গার গোমতি এলাকাবাসীর গরিয়া নৃত্য: ত্রিপুরাদের আত্মপরিচয় ও সংস্কৃতি 

রিকেন চাকমা
  • প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু উপলক্ষে মাটিরাঙ্গার গোমতি এলাকাবাসীর গরিয়া নৃত্য: ত্রিপুরাদের আত্মপরিচয় ও সংস্কৃতি 

নিজস্ব প্রতিনিধি,পাহাড়ের কন্ঠ
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

বৈসু, সাংগ্রাই, বিঝু ও বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি ৮ নং আমতলী ইউনিয়ন ৯ নং ওর্য়াড ডুলুকছড়া সর্বসিদ্ধি পাড়ায় গরিয়া নাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল ২০২৫) সকাল ১১টায় শুরু হয়,
নৃত্যে চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন—তিন দিনব্যাপী এ উৎসব পালন করা হয়। প্রথম দিনকে
গরিয়া নৃত্যে ২২ তাল’; অর্থাৎ এই নৃত্যে ২২টি ভিন্ন ভিন্ন ছন্দ, ভঙ্গি, তাল ও গতিরূপ রয়েছে, যা গরিয়া দেবতার পূজা থেকে শুরু করে তাঁর বিদায় পর্যন্ত প্রতিফলিত করে। নৃত্যটি শুরু হয় গরিয়া দেবতাকে আহ্বান করার মাধ্যমে, এরপর ধাপে ধাপে চলে তাঁর অর্চনা, কীর্তন, আশীর্বাদ প্রার্থনা, উৎসব উদ্‌যাপন এবং শেষে বিদায় অনুষ্ঠান। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো নৃত্যকারদের পোশাক ও সজ্জা। তাঁরা রঙিন ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরেন, নারীরা গা–ভর্তি গয়না পরে নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি ধাপে থাকে নির্দিষ্ট গান, বাদ্যযন্ত্র (ঢোল ও বাঁশি), দেহভঙ্গিমা এবং চক্রাকারে নাচের ধরন। ত্রিপুরাদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক, সহমর্মিতা ও ঐক্য বজায় রাখার অন্যতম পদ্ধতি হলো বৈসু উৎসব। বৈসু উপলক্ষে সব বয়সের মানুষ একত্র হন—ছোট–বড়, নারী–পুরুষ। সবাই মিলে ঘর সাজানো, রান্নাবান্না, অতিথি আপ্যায়ন, নাচগান ও খেলাধুলায় অংশগ্রহণ—এসব মিলেই একটি সামষ্টিক চেতনা, পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সহানুভূতির বন্ধন দৃঢ় হয়। কোনো ব্যক্তি বা পরিবার একা নয়—এই বৈসু উৎসব একে অপরের সঙ্গে সামাজিক সংযোগের একটি মোহনা হয়ে ওঠে। যেখানে আধুনিক সমাজে প্রতিবেশীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে, সেখানে বৈসু উৎসব ত্রিপুরা সমাজে মানবিক সম্পর্ক দৃঢ় করে। উৎসবের সময়ে পারিবারিক বিরোধও মিটে যায়, সবাই একত্রে আনন্দে মিলিত হন। এর ফলে একটি শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন গড়ে ওঠে, যা একটি সম্প্রদায়ের টিকে থাকার অন্যতম পূর্বশর্ত। আধুনিক যুগে যেখানে অনেক ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি বিলুপ্তির মুখে! ভাষা হারাচ্ছে, পোশাক বদলাচ্ছে, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে বৈসু উৎসব ও গরিয়া নৃত্য একটি সচেতন সংস্কৃতি সংরক্ষণের হাতিয়ার। ত্রিপুরা সমাজে এই বৈসু উৎসব কেবল প্রাচীন প্রথা পালনের জন্য নয়, বরং নতুন প্রজন্মকে শিকড়ের সঙ্গে যুক্ত করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই উৎসবে: ত্রিপুরা ভাষায় গান গাওয়া হয়, ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরা হয়, লোকবাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা নাচ শেখে, গরিয়া পূজার আচার শেখে, গ্রামীণ জীবনের আনন্দময় রূপ প্রত্যক্ষ করে। এভাবেই প্রজন্মান্তরে সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হয়। ত্রিপুরা বাংলাদেশের একটি সংখ্যালঘু জাতিস্বত্তা হওয়ায় নিজস্ব পরিচয় টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই নিজেদের অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা টিকিয়ে রাখার জন্য আত্মপরিচয়ের চর্চা জরুরি। বৈসু উৎসব সেই আত্মপরিচয়ের চর্চাকে দৃঢ় করে। এই বৈসু উৎসবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে ত্রিপুরা অনুভব করেন—ত্রিপুরা একটি জাতি, যাদের নিজস্ব ইতিহাস, বিশ্বাস ও সংস্কৃতি আছে। এই আত্মপরিচয় যখন নৃত্যে, গানে, উৎসবে ও ঐতিহ্যে প্রকাশ পায়, পুরো দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকেও সমৃদ্ধ করে। এই চেতনা আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষার প্রেরণা দেয়, এবং বৃহত্তর সমাজে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরার সুযোগ তৈরি করে। ‘যদিও বৈসু উৎসব ও গরিয়া নৃত্য’ এখনো ত্রিপুরা সমাজে জীবন্ত আছে, কিন্তু তা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। শহরকেন্দ্রিক জীবনধারা, প্রযুক্তির প্রভাবে তরুণসমাজের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। অনেকেই উৎসবকে ‘পুরোনো দিনের ব্যাপার’ বলে অবহেলা করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট