জুম চাষ(Shifting Cultivation) পাহাড়ি এলাকায় প্রচলিত এক ধরনের কৃষিপদ্ধতি। "জুম চাষ" বিশেষ শব্দে "ঝুম চাষ" নামেও পরিচিত। "ঝুম চাষ" এক ধরনের স্থানান্তরিত কৃষিপদ্ধতি। এটি মূলত জঙ্গল কেটে পুড়িয়ে চাষ করা হয়, আবার সেই স্থানে জমির উর্বরতা কমে গেলে পূর্বের স্থান হতে কৃষি জমি স্থানান্তরিত করে অন্যত্র আবার কৃষি জমি গড়ে ওঠে। পাহাড়ের গায়ে ঢালু এলাকায় এই চাষ করা হয়। এই পদ্ধতির চাষে বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হয়। জুম চাষ পাহাড়েরে জীবন জীবিকার প্রধান অবলম্বন। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ২০০০০ হেক্টর ভূমি এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়।
"ঝুম চাষ" ভারতে পোড়ু, বীরা, পোনম, প্রভৃতি নামেও পরিচিত। চাকমা সমাজে জুম চাষ বেশ জনপ্রিয়।
জুমে বীজ বপনের ৬ মাস পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের পর ফসল পাওয়া যায়।
পাহাড়িরা পৌষ-মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালে জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে রৌদ্রে শুকানোর পর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জুম চাষের উপযোগী করে তুলে। এরপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে পোড়া জুমের মাটিতে সূঁচালো দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম বীজ বপন করে থাকে। আর এসব জুমের ধান আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেই পেকে থাকে। তারপর শুরু হয় জুমের ফসল তোলার কাজ । সে সময় মারফা, কাঁচামরিচ, চিনার, ভুট্টা পাওয়া যায়। ধান পাকে ভাদ্র-আশ্বিন মাসে। সবশেষে তুলা, তিল, যব ঘরে তোলা হয়।
মূলত কিছু (৩-৫) বছর পাহাড়ের গায়ে, কিছু স্থানে চাষ করে সেই স্থানকে উর্বরতা বৃদ্ধি করার জন্য রেখে দিয়ে, আবার পাহাড়ের অন্য স্থানে গিয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে চাষাবাদ করাই হলো জুম চাষ।