সন্তু লারমা ও তার সংগঠনের সামনে আজ চরম অস্তিত্ব সংকট। এই মুহূর্তে সন্তু লারমা এবং তার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) এক গভীর অস্তিত্ব সংকটে পতিত হয়েছে। এক সময়ের ঐতিহাসিক সশস্ত্র আন্দোলন এবং ১৯৯৭ থেকে দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ধারক এই সংগঠনটি এখন মাঠে এবং রাজনৈতিক ভাবে বারবার ব্যর্থতার মুখোমুখি হচ্ছে। তারা তাদের পূর্বের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব শুধু হারাতে বসেছে তা নয় পুরো অস্তিত্বের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হচ্ছে। তাদের টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ এখন।
সন্তু লারমা এবং জেএসএস এর ভারতের ভূখণ্ডে যে সাম্রাজ্য তৈরি হয়েছিল দীর্ঘ সময় ধরে, তারও আজ পরিসমাপ্তির দ্বারপ্রান্তে। ভারত সরকার এখন কঠোর অবস্থান নিয়েছে। সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি এবং পরিকল্পিত ধরপাকড়ের মাধ্যমে ভারতের মাটিতে অবস্থান করা ক্যাডারদের শনাক্ত করে ফিরিয়ে দিচ্ছে। ফলে ভারতে সাময়িক আশ্রয় নিয়ে সংগঠিত হওয়ার কিংবা শক্তি পুনর্গঠনের যে কৌশল ছিল, সেটিও এখন আর কার্যকর থাকছে না।
সাম্প্রতিক সময়ে মাছহলা এলাকায় পিসিজেএসএস-এর সশস্ত্র ক্যাডারদের পিছু হটতে হয়েছে। একই সঙ্গে জেএসএস নেতাকর্মী ঘিরে ত্রিপুরা রাজ্যে গতকাল শুরু হওয়া ব্যাপক ধরপাকড় পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশ্বাসযোগ্য সূত্র জানায়, ভারত থেকে সন্তু লারমা নিজেও খালি হাতে ফিরে এসেছেন, যা তার নেতৃত্বের দুর্বলতা এবং বর্তমান সংকটের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই বাস্তবতায়, সন্তু লারমা এবং তার ঘনিষ্ঠ নেতাকর্মীরা এখন প্রতিরক্ষামূলক মনোভাব ত্যাগ করে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে প্রস্তুত। তারা নিজেদের টিকিয়ে রাখতে চূড়ান্তভাবে বিরোধী মত, স্বাধীন চিন্তা, সমালোচক এবং তাদের পরিবার ও শান্তিকামী জনগণের ওপর হামলা চালাতে পারে—তা সরাসরি হত্যাকাণ্ড, হুমকি-ধমকি কিংবা নানা ধরনের মানসিক, ব্যাক্তিগত ক্ষতিগ্রস্তের মাধ্যমে কিংবা সেটা সামাজিক ক্ষতির মাধ্যমে হোক না কেন।
এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সকল নিরীহ, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপ্রিয় নাগরিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানচ্ছি যে—সন্তু লারমা ও তার নেতাকর্মীদের সঙ্গ ত্যাগ করুন। একটি অস্তিত্বহীন ও হিংসাত্মক রাজনীতির সঙ্গ আপনাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, সামাজিক অবস্থান এবং ভবিষ্যৎকেও প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। তাদের পতনের ভার যেন আপনাকে টেনে না নেয়। সময় এসেছে বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার—সেই সিদ্ধান্ত হোক শান্তি, মানবতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পক্ষে। তাদের মত করে প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার হবেন না এবং শত্রুতা তৈরি করবেন না। প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ, হিংসা কোন মতেই সমাধান নয়।