Bitak Chakma — একজন বিবেকবান পাহাড়ি নাগরিকের কলম থেকে।
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা—এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক ভিত্তি। কিন্তু যখন এই অধিকারটিকে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থে দমন করা হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে: আমরা কী দিকেই বা এগোচ্ছি?
আজ আমরা এক এমন সময়ের মুখোমুখি, যেখানে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রান্তিক জনগণের পক্ষে কলম ধরার মতো একজন স্বাধীনচেতা লেখক, প্রজ্ঞা তাপস চাকমাকে চরম হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। কানাডায় বসবাসকারী এই নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, মানবিক লেখক শুধুমাত্র নিজের বিবেক ও চিন্তা থেকেই লিখেন—কাউকে তুষ্ট করার জন্য নয়, বরং সত্যকে বলার দায় থেকেই।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে জানা যাচ্ছে, সন্তু লারমা গোষ্ঠী—বিশেষ করে তার জামাতা প্রীতি বিন্দু চাকমা এবং কন্যা জুলিয়ানা চাকমা লারমা—প্রজ্ঞা তাপসের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত শত্রুতার মনোভাব থেকে প্রতিহিংসায় লিপ্ত হয়েছেন। এমনকি তারা কানাডার অভিবাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রজ্ঞা তাপসের নামে অভিযোগ ও মামলা করেছেন—যার উদ্দেশ্য একটাই: তাকে চুপ করিয়ে দেওয়া।
এই ঘটনা শুধু একজন লেখকের উপর আঘাত নয়, বরং এটি একটি চিন্তাধারার উপর আঘাত। এটি বাকস্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ। প্রশ্ন আসে, সন্তু লারমা ও তার ঘনিষ্ঠজনেরা কী পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধান চান, নাকি সত্য বলার মানুষদের দমন করে একটি নিয়ন্ত্রিত নীরবতা কায়েম করতে চান?
প্রজ্ঞা তাপস কোনো পক্ষাবলম্বন করেন না। তিনি একজন মুক্তবুদ্ধির মানুষ। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিকার, বৈষম্য, নিপীড়ন এবং স্বার্থবিরোধী রাজনীতির বিরুদ্ধেই বরাবর কথা বলেছেন। এ কারণেই হয়তো আজ তিনি বিরাগভাজন, হয়তো এ কারণেই তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
কিন্তু আমরা ভুলে যাচ্ছি—প্রজ্ঞা তাপস একজন নন, তিনি একটি প্রতীক। তিনি সেই কণ্ঠ, যে ভয় না পেয়ে বলে উঠতে পারে, ‘এই অন্যায় বন্ধ হওয়া উচিত।’ তাকে দমন মানে সত্যকে দমন করা। অথচ ইতিহাস সাক্ষী, সত্য কখনোই দীর্ঘদিন দমন করে রাখা যায় না।
আমি এবং আমার মতো আরও অসংখ্য বিবেকবান নাগরিক, যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি, যারা পাহাড়ি জনগণের অধিকারকে সম্মান করি—তারা আজ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক কণ্ঠে বলি:
“প্রজ্ঞা তাপস একা নন। তিনি আমাদেরই প্রতিনিধি। এবং তাকে দমন মানে আমাদের সবাইকে দমন করা।”
আসুন, আমরা বিভেদের রাজনীতিকে নয়, সত্য ও ন্যায়ের পথে একত্রিত হই।