কোন না কোন ইস্যুতে একমাত্র ইউপিডিএফ প্রতিবাদ করে” মন্তব্য করায় অন্য একটি দলের কর্মীদের মারধরের শিকার এক যুবক
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চায়ের দোকানে আলাপ-আলোচনাকালে “পার্বত্য চট্টগ্রামে দলগুলোর মধ্যে কোন না কোন ইস্যুতে একমাত্র ইউপিডিএফ প্রতিবাদ করে” মন্তব্য করায় অন্য একটি দলের কর্মীদের মারধরের শিকার হয়েছেন এক যুবক।
দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজারে গত (৮ জুন ২০২৫) রাতের ঘটনা এটি।
চিক্কো মনি চাকমা (২০) নামে এক যুবক ও তার এক সঙ্গী বোয়ালখালী বাজারে একটি চায়ের দোকানে বসে চা-নাস্তা করার সময় নানা বিষয়ে আলাপের পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি বিষয়েও দু’জনে আলাপ করছিলেন। দু’জনের আলাপকালে চিক্কো মনি চাকমা ... “পার্বত্য চট্টগ্রামে যতগুলো পার্টি আছে তার মধ্যে ‘একমাত্র ইউপিডিএফ কোন না কোন ইস্যুতে কিছুটা হলেও প্রতিবাদ করে’ বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু তার এ কথাটি যে কাল হয়ে দাঁড়াবে তিনি ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি। কারণ তিনি চিনতে পারেননি যে, ওই দোকানে অন্য একটি দলের কয়েকজন কর্মী বসা রয়েছেন।
চিক্কো মনি চাকমার এমন মন্তব্য শুনে ওই দলটির কর্মীরা হজম করতে পারেননি। কেন তিনি ইউপিডিএফের প্রশংসা করলেন সেটাই হয়ে গেলো তার মস্তবড় অপরাধ! ফলে ওই দলের কর্মীদের মারধরের শিকার হন তিনি।
ভূক্তভোগী চিক্কো চাকমার বাড়ি মধ্যম বোয়ালখালীর ঝিমিত কার্বারি পাড়ায়। তার পিতার নাম মৃত সুনীল চাকমা বলে জানা গেছে।
ছবি চিত্র : চিক্কো মনি চাকমার
ঘটনার বিষয়ে চিক্কো মনি চাকমা এ প্রতিবেদককে বলেন, “গত ৮ জুন রাত ৯টার সময়ে গ্রামের এক সঙ্গীসহ আমরা দু’জন মিলে বোয়ালখালী বাজারে এসে এক বাঙালির চায়ের দোকানে বসে চা-নাস্তা করার সময় পরিস্থিতি বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করি। তখন আমি আমার সঙ্গীকে বলি যে, পার্বত্য চট্টগ্রামে দলগুলোর ‘এগত্তর’ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এদিকে পুরো পাহাড়ে একের পর এক ধর্ষণ-হত্যা-ভূমি বেদখল বেড়ে চলেছে। দলগুলোর তেমন কোন প্রতিরোধ নেই। তবে সব দলের মধ্যে ‘একমাত্র ইউপিডিএফ কোন না কোন ইস্যুতে কিছুটা হলেও প্রতিবাদ করে’। এসব মন্তব্য করাতে একই দোকানে বসা ৫ জন লোক আমাকে মারধর করেন। পরে জানতে পারি তারা ‘সংস্কার’ দলের কর্মী। মারধর করার পরও তারা আমাকে ছেড়ে দেয়নি। আমাদের গ্রামের মুরব্বীদের কল করে বোয়ালখালী বাজার ডেকে আনে। তারপর আমাকে মুরব্বীদের কাছে হস্তান্তর করে ৯ জুন অভিভাবকসহ তাদের অফিসে যেতে নির্দেশ দেয়” বলেন তিনি।
এ ঘটনার পর ভয়ে পালিয়ে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি এলাকায় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
এলাকার সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে পার্টি বা দলগুলোকে সমালোচনা করার অধিকার জনগণের রয়েছে। কারণ জনগণের টাকা ও সহযোগিতায় তো দলগুলো চলছে। তাই সামান্য সমালোচনার কারণে কাউকে মারধর করা চরম অন্যায় ও অমানবিক। জুম্ম দলগুলোকে অবশ্যই এ ধরণের আচরণ পরিহার করতে হবে।