সন্তু লারমা অবৈধ গোলাবারুদ চালান জব্দ!
সন্তু লারমা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করে আসছেন যে অর্থই হচ্ছে ক্ষমতার মূল উৎস। সন্তু লারমার ধারণা হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ—যা হাজার হাজার কোটি টাকার সমান—তাকে চিরস্থায়ী ক্ষমতা ও আধিপত্য বজায় রাখতে সহায়তা করবে। সন্তু লারমা মনে করে আসছেন, টাকা দিয়েই মানুষকে কেনা যায়, তাদের অনুগত রাখা যায়, অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহ করা যায় এবং একটি কর্তৃত্ববাদী সাম্রাজ্যে আমৃত্যু ধরে রাখতে পারবেন।
বিগত সময়ে বাস্তবতাও তার পক্ষে কাজ করেছে বটে। সন্তু লারমা অবশ্যই সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী কিছু মানুষকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আবার কাউকে ভরণ পোষণ দিয়ে নিজের পাশে টিকিয়ে রেখেছিলেন, যারা বিনিময়ে তার আদেশ-উপদেশ পালন করে আসছে। কিন্তু সময় বদলেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনের অবসানের পর সেই প্রেক্ষাপট সন্তু লারমার দীর্ঘদিনের অনৈতিক ও একচেটিয়া কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এখন।
এই নতুন বাস্তবতায়, আগের মতো টাকা আর তার জন্য ঢাল হতে পারছে না। ধীরে ধীরে তার অনুগতরা পরিস্থিতি বুঝে সরে যাচ্ছে—কারণ তারা বুঝতে পারছে এই সাম্রাজ্যের ভিত্তি দুর্বল ও টেকসই নয়। তার বিপুল অর্থ ব্যয় করেও অস্ত্র ও গোলাবারুদের চোরাচালান বার বার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ছে। ফলে তার অপারেশনাল নেটওয়ার্কে ফাটল ধরেছে এবং আগের মত তার প্রতিপক্ষের দল ইউপিডিএফ এর সঙ্গে ধর্মযুদ্ধ করতে পারছে না এবং তার জন্য দুই তিন দিন আগে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিতে বাধ্য হয়েছিল।
এই সবকিছুর সমন্বয়ে সন্তু লারমার কর্তৃত্ববাদী অবস্থান এখন ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েছে। অর্থভিত্তিক অনৈতিক ক্ষমতার জাল আর টিকিয়ে রাখা যাচ্ছে না। তিনি এখন এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন—যেখানে অর্থ, অস্ত্র এবং অনুগতদের ওপর তার নিয়ন্ত্রণ ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। এটা একটি স্পষ্ট বার্তা যে,টাকা দিয়ে সবকিছু কেনা যায় না, এবং অন্যায়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সাম্রাজ্য চিরস্থায়ী হয় না।