পার্ট এলাকায় জেএসএস (সন্তু লারমা) দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে জাতি-বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগ নতুন নয়। তবে এবার নতুনভাবে সামনে এসেছে তাদের পারিবারিক জীবনের নানা অনিয়মের গুঞ্জন।
স্থানীয় সূত্র ও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্য অনুযায়ী, জেএসএস নেতারা নিজেদের স্ত্রীদের গন্ডাছড়া এলাকায় রেখে বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। এ সুযোগে অনেক স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন নারায়ণপুর এলাকার একজন প্রবীণ রাজনৈতিক বিজেপি নেতা রতন মনি চাকমা।
তিনি ফেসবুকে প্রকাশিত এক পোস্টে বলেন,
“দেশকুলত চাকমাগুন লরা-লড়ি গরি মত্তন, তারা মত্তুন কালা চশমা মাদাত দি গুত্তন।”
এই বক্তব্যে ইঙ্গিত করা হয়, জেএসএস নেতাদের স্ত্রীরা স্বামীদের অনুপস্থিতিতে ফ্যাশন ও পরকীয়ায় মত্ত হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাসের পর মাস বাইরে থাকা জেএসএস নেতাকর্মীরা স্ত্রীর জন্য অর্থ পাঠালেও সেই টাকা ব্যবহার করে এক শ্রেণির নারী স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়াচ্ছে। বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
জেএসএস (সন্তু লারমা) দলের নেতাকর্মীরা যেখানে মাসের পর মাস বিভিন্ন জায়গায় সশস্ত্র কার্যক্রমে লিপ্ত, সেখানে তাদের পরিবারের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে পরকীয়া, ভোগ-বিলাস ও নৈতিক বিচ্যুতির পথে হাঁটছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এখানেই শেষ নয়—শোনা যাচ্ছে, কিছু স্ত্রী জায়গা-জমি বিক্রি করে বিদেশ বহিঃরাজ্যে বা দেশের বাইরের অঞ্চলে পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যাচ্ছে। এমনই একটি আলোচিত ঘটনা ঘটে জন চাকমা নামে এক জেএসএস সশস্ত্র কমান্ডারের মৃত্যুর পর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জন চাকমা গুরুতর অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর, তার স্ত্রী সেই জায়গা-জমি বিক্রি করে প্রায় ১২ লক্ষ রুপি সংগ্রহ করেন। পরে সেই অর্থ নিয়ে তিনি এক পরপুরুষের সঙ্গে পালিয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় জেএসএস এর ব্যাপক হট্টগোল সৃষ্টি হয়। সমাজপতিরা পর্যন্ত এতে হতবাক হন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় জনগণ মনে করছেন, জেএসএস দলটি শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়, বরং নৈতিকভাবেও সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ছে। একসময় যেসব এলাকায় জেএসএস দাপট দেখাতো, সেসব স্থানে এখন তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে, জেএসএস-এর মাঠপর্যায়ের অনেক সদস্য সম্প্রতি পানছড়ি,নাড়াইছড়ি প্রতিরোধে পড়ে আহত বা নিহত হচ্ছে। চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতেও নিরাপদ নয় বলে অনেকেই সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, এসব ঘটনা প্রমাণ করে জেএসএস এখন নৈতিকভাবে পরাজয়ের মুখে। একসময় যেসব এলাকায় তারা কর্তৃত্ব করতো, আজ সেইসব এলাকাতেই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।
গন্ডাছড়া মহকুমায় একসময় জেএসএস-এর প্রভাব ছিল তুঙ্গে। তবে বর্তমানে তাদের নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে, এবং জনগণ তাদের সঙ্গে কথা বলতেও অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।
স্থানীয়দের দাবি, জেএসএস এখন নেতৃত্বহীন ও আদর্শচ্যুত একটি গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে। অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলা ও নৈতিক পতন তাদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।