পার্বত্য চট্টগ্রামের সংঘাত বন্ধের আহ্বানে ত্রিপুরায় সচেতন জনজাতির লিপলেট বিতরণ
পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় "ত্রিপুরার সচেতন জনজাতি" নামক একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে লিপলেট বিতরণ করা হয়েছে।
এই লিপলেট বিতরণ কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের শিলাছড়ি, নতুন বাজার, যতনবাড়ি, তৈচাকমা, করল্যাছড়ি, নন্দন নগর, চানমারি, নাগিছড়া ও অভয়নগর এলাকায়। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ইজিরা ও রামভদ্র এলাকা থেকেও লিপলেটের কপি ওয়ালে লাগানো অবস্থায় দেখা গেছে।
লিপলেটে বলা হয়, “আমরা, ত্রিপুরার সচেতন চাকমা, মগ (মারমা) ও ত্রিপুরা জনগণ, পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত বন্ধে ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচলে বসবাসরত সকল জনজাতির প্রতি জরুরি আহ্বান জানাচ্ছি।”
লিপলেটটিতে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে যে, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য শান্তিচুক্তির পরও জেএসএস (সন্তু গ্রুপ) কর্তৃক দমনমূলক ও ঐক্যবিরোধী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই সংঘাত চলছে। এতে বহু নিরীহ রাজনৈতিক কর্মী ও সাধারণ জনগণ প্রাণ হারিয়েছে।
জেএসএসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ:
লিপলেটে দাবি করা হয়, গণতান্ত্রিক সংগঠন ইউপিডিএফসহ অন্যান্য পক্ষ সংলাপ ও সমঝোতার চেষ্টা করলেও জেএসএস তা বারবার প্রতারণার মাধ্যমে ভঙ্গ করে একতরফা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী ও বাঙালি সেটলাররা। আর সরাসরি ক্ষতির শিকার হচ্ছে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী জনজাতি।
ত্রিপুরার সচেতন জনজাতির ৫ দফা আহ্বান:
১. জেএসএস সন্তু গ্রুপের প্রতি সকল প্রকার রাজনৈতিক ও সামাজিক সমর্থন প্রত্যাহার
২. সংঘাতের জন্য জেএসএসকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা
৩. ঐক্য, সংলাপ ও সহাবস্থানের পথে ফিরে আসা
৪. ভারতে জেএসএস নিষিদ্ধ ঘোষণা
৫. ত্রিপুরা, মিজোরাম ও অরুণাচলে জেএসএস সদস্যদের সামাজিকভাবে বয়কট ও বহিষ্কার
লিপলেটের শেষাংশে দৃঢ় বার্তা দেওয়া হয়, “ভ্রাতৃঘাতী সংঘাত অব্যাহত থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জনগোষ্ঠী বিলুপ্তির মুখে পড়বে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে।”
অত্র এডিসি ভিলেজ জনজাতি এলাকায় এই ধরনের সচেতনতা কর্মসূচি নতুন মাত্রার গণজাগরণ সৃষ্টি করেছে বলে জনজাতিরা মন্তব্য করছেন।