সন্তু লারমার নতুন দুটি দল গঠনের অভিযোগ তুললেন গৌতম কুমার চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আবারও নেমে এসেছে অস্থিরতার ছায়া। দীর্ঘদিন ধরেই নানা চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিতর্কিত সন্তু লারমা এবার নাকি নতুন দুইটি দল গঠনের পরিকল্পনায় নেমেছেন। বিষয়টি প্রকাশ্যে আনলেন তারই দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বর্তমান জেএসএস-এর সহ-সভাপতি গৌতম কুমার চাকমা ওরফে অশোক বাবু।
গৌতম কুমার চাকমা জানিয়েছেন, সন্তু লারমা এখন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য এবং বাংলাদেশে দুটি আলাদা রাজনৈতিক দল গঠনের মাধ্যমে পাহাড়ি সমাজকে আবারও বিভক্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। ভারতের ত্রিপুরায় অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে নতুন দল তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তার ঘনিষ্ঠ এক নাতনিকে। আর বাংলাদেশে ইউপিডিএফ থেকে দলছুট হয়ে আসা কিছু নেতাকে ব্যবহার করে নিরপেক্ষ ছাত্র সমাজকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে।
রাজনৈতিক মহল বলছে, এই পদক্ষেপ সফল হলে পাহাড়ি রাজনীতিতে আবারও নতুন দুটি শক্তি তৈরি হবে, যার ফলে পুরনো বিভাজন আরও গভীর হবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সন্তু লারমার এ পরিকল্পনা মূলত ব্যর্থ চুক্তি রাজনীতির হতাশা থেকে উদ্ভূত। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তিনি আজ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন এবং এমন পর্যায়ে পৌঁছেছেন যে, নিজ জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েও অন্য কারো নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য হতে দেবেন না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯৮০-পরবর্তী সময়ে পাহাড়ি সমাজে যে গ্রাম্য রাজনীতির ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ে, তার অন্যতম জনক ছিলেন সন্তু লারমা নিজেই। তার স্বৈরতান্ত্রিক “এক বনে এক বাঘ” নীতির কারণে তাতিন্দ্রলাল চাকমা (পেলে বাবু)-এর মতো প্রবীণ নেতাদের সাথেও সংঘাত বাধে। পেলে বাবুর লেখায় উঠে এসেছে, সন্তু একসময় ১৭২ জন সম্মানিত চাকমা প্রবীণকে “জাতির শত্রু” আখ্যা দিয়ে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এখনও সেই পুরনো ধারা বজায় রেখে তিনি পাহাড়ি সমাজকে ভাঙতে চাইছেন, এমনটাই অভিযোগ রাজনৈতিক মহলের। তাদের মতে, এই নতুন ষড়যন্ত্র সফল হলে জুম্ম সমাজে বিভাজন চরম আকার ধারণ করবে এবং পাহাড়ি ঐক্য চিরতরে ভেঙে পড়তে পারে।
সতর্কতামূলক বার্তা দিয়ে এক প্রবীণ রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, নোনাহাজির (সন্তু লারমা) জাতবিধ্বংসী নীতির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। পাহাড়ি জাতি আর কোনোভাবেই ভাঙন সহ্য করতে পারবে না। এখন সময় এসেছে বিভাজনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।