পানছড়ি উপজেলার দূর্গামনি পাড়ার নোলাকমনি চাকমার ছেলে তরুণ বিকাশ চাকমা, যিনি সন্তু বাহিনীর কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর অবশেষে তার সাপ্তাহিক ক্রিয়া সম্পন্ন হলো।
গত দুই সপ্তাহ ধরে পরিবারের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে পানছড়িতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্লাটুন কমান্ডার সদ্য মৃত রুপেশ তনচংগ্যার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন— বিকাশ ভারতে পালিয়ে গেছে এবং আর তাদের সংগঠনে কাজ করছে না। কিন্তু বাস্তবে ৫ আগস্ট নারাইছড়িতে প্রতিপক্ষকে নৌকাযোগে আক্রমণ করতে গিয়ে বিকাশ নিজেই পাল্টা আক্রমণে নিহত হন। তার লাশ মাঈনি নদীতে ভেসে যায়।
পরিবারকে এ খবর জানানো হয়নি। বরং মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়। এদিকে বিকাশের পরিবারের সদস্যরা বারবার স্বপ্নে তাকে ভাত খুঁজতে দেখছিলেন। পরিবারের সবার কাছে একই ধরনের স্বপ্ন আসতে থাকায় সন্দেহ তৈরি হয় যে, হয়তো বিকাশ আর বেঁচে নেই।
অন্যদিকে, প্রতিপক্ষের হামলায় রুপেশ তনচংগ্যার মৃত্যুর পর তার লাশও পরিবারকে দেওয়া হয়নি। সে সময় সন্তু বাহিনীর অন্যান্য কমান্ডাররা পাহারায় সৈনিক রেখে প্রচুর মদ্যপান করে এবং ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতের জন্য সন্তু লারমাকে দোষারোপ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের মধ্যে একজন মনকষ্টে বলে ওঠে— “আমরা মারা গেলে আমাদের লাশও হয়তো পরিবারের কাছে ফিরবে না, ঠিক বিকাশ আর রুপেশের মতো।”
অবশেষে মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর বিকাশ চাকমার পরিবার সত্যটা জানতে পারে। নিয়ম অনুযায়ী মৃত্যুর এক সপ্তাহের মাথায় সাপ্তাহিক ক্রিয়া দেওয়ার প্রচলন থাকলেও, দীর্ঘ দেরির পর আজ তার সাপ্তাহিক ক্রিয়া সম্পন্ন হলো।