পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা অভিযানের নামে স্কুলভবন দখল করে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন, গ্রামে নির্বিচারে তল্লাশি, নারীদের সাথে অসদাচরণ, লুটপাট, ধরপাকড় ও শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত করার প্রতিবাদে রামগড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম।
সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার দাতারামপাড়া মুখ এলাকা থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে যৌথ খামার এলাকায় সমাবেশে মিলিত হয়।
নেতাদের বক্তব্য
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পিসিপি রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি তৈমাং ত্রিপুরা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুরেশ ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি ধনু ত্রিপুরা ও সাধারণ সম্পাদক শান্ত চাকমা।
শান্ত চাকমা অভিযোগ করেন, “গ্রামে গ্রামে বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে, মানুষকে আটক-হয়রানি করা হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করা হচ্ছে। সেনারা যদি সত্যিই নিরাপত্তার জন্য কাজ করতো তবে স্কুল দখল না করে শিক্ষা বিস্তারে সহায়তা করত।”
তৈমাং ত্রিপুরা বলেন, “আমরা এই দেশের নাগরিক হয়েও বারবার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। সেনা অভিযানের নামে ঘরবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে দলিলপত্র ও অর্থ লুট করা হচ্ছে।”
ধনু ত্রিপুরা জানান, “অভিযানের কারণে কৃষকরা ক্ষেতে যেতে পারছে না, শ্রমজীবীরা কাজ হারাচ্ছে, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে গেছে। নারীরা অতীতের মতো নির্যাতন ও অপহরণের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
বক্তারা বলেন, ইউপিডিএফ সবসময় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। অথচ সেনারা প্রকৃত সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে টার্গেট করছে।
হামলা ও অপহরণের ঘটনা
সমাবেশ শেষে নাকাবা বাজারে ফেরার পথে সেনা-সমর্থিত মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা অস্ত্র তাক করে গাড়িবহর আটকায়। এসময় তারা গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি ধনু ত্রিপুরার ওপর হামলার চেষ্টা চালায় এবং বাসনা মোহন চাকমা নামে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সমাবেশে উপস্থিতরা একযোগে ঘোষণা দেন, “পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ আর দমন-পীড়ন মেনে নেবে না। সেনা অভিযান ও অস্থায়ী ক্যাম্প অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব।