মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি, পাহাড়ের কন্ঠ নিউজ
রবিবার , ১৮ মে ২০২৫
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম নেতা শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা হত্যার ১যুগ স্মরণে স্মরণ সভা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (১৮ মে ২০২৫) সকাল ১০টায় গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখা উদ্যোগে এই স্মরণ
সভার আয়োজন করে।
স্মরণ সভায় শুরুর পূর্বে শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী স্মৃতিস্তেম্ভে পুস্তক অর্রপন করেন গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুইচিং মারমা ও গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা কমিটির সভাপতি রনি ত্রিপুরা,গনতান্ত্রিক যুব ফোরামের উপজেলা কমিটি অর্থ সম্পাদক লালন ত্রিপুরা, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)এর পক্ষ থেকে মাটিরাঙ্গা গোমতি ইউনিটের সমন্বয়ক সুইমং মারমা ও মংচি মারমা, সাবাই মারমা, শহীদ পরিবারবর্গ পঞ্চসেন ত্রিপুরার পিতা খুকসেন ত্রিপুরা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এরপর শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
পরে মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি রনি ত্রিপুরা
সভাপতিত্বে ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নব বিকাশ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার অর্থ সম্পাদক লালন ত্রিপুরা,খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সদস্য রিকেন চাকমা ,গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সুইচিং মারমা, ইউপিডিএফের মাটিরাঙ্গা উপজেলা গোমতি ইউনিট সমন্বয়ক সুইমং মারমা।
সভায় বক্তারা বলেন, পঞ্চসেন ত্রিপুরা ২০১২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের যুব সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের মাটিরাঙ্গা উপজেলা শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৩ সালে ১৮ মে গভীর রাত ২টায় সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ভাড়াতীয়া গোন্দা, চর, দালাল, ঘাতক দুর্বৃত্তরা টাকার বিনিময়ে তাকে সে দিনে রাতের অন্ধকারে তার বাড়িতে গিয়ে জন্মের মাত্র ৫ দিন বয়সে এক ছোট্ট কন্যার সামনে তাকে গুলি করে হত্যা করে কাপুরুষের মত পালিয়ে গিয়ে পাশ্ববর্তী বিজিবি’র পলাশপুর জোনের আশ্রয় নিয়েছিল। সেদিনের রাতের রক্তের বন্যায় মাটিতে লুটে পরেছিল শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা,হত্যাকারীদের গ্র ১যুগ ধরেও অপরাধীদের এখনো শাস্তি দেয়নি।
তিনি জুম্ম জনগণের অধিকার আদায়ের শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় শাসকগোষ্ঠীর সকল ধরণের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন রাজ পথে, মিছিলে-মিটিংয়ে, সভা-সমাবেশে, অবরোধে কর্মসূচিগুলোতে সোচ্চার ছিলেন তিনি।
বক্তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি পূর্ণস্বায়ত্বশাসন আদায়ের আন্দোলনে তিনি এক নিবেদতি প্রাণ কর্মী ছিলেন। তিনি মাটিরাঙ্গা এলাকায় ভূমি বেদখলসহ অন্যায় নিপীড়নের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। যার কারণে শাসকগোষ্ঠি প্রতিক্রিয়াশীল চক্রকে লেলিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে তাকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
বক্তারা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ঘাতকরা পঞ্চসেন ত্রিপুরাকে হত্যা করতে পারলেও তিনি যে আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন তা হত্যা করতে পারেনি। তাঁর আত্মবলিদান এবং তাঁর লালিত আদর্শ-চেতনাই যুবসমাজকে আরো বেশি সুদৃঢ়ভাবে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রেরণা যুগিয়েছে।
সভার সভাপতি রনি বলেন, শহীদ পঞ্চসেন ত্রিপুরা আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁকে হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করতে হবে। তিনি গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাথে যুক্ত হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠানে এগিযে আসার জন্য ছাত্র-যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।