অরুণাচল প্রদেশ চাকমা স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সভাপতি রুপ সিং চাকমার একটি ভিডিও প্রেজেন্টেশন দেখলাম, যার লিংক কমেন্ট সেকশনে দেওয়া রয়েছে। ওই ভিডিওতে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান মি. সন্তু লারমার বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরেন। তিনি জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কাছে মিসেস শিপ্রা দেওয়ান (মিসেস লারমা) কর্তৃক লিখিত একটি অভিযোগপত্র উপস্থাপন করেন, যা তার নিজ হাতে লেখা বলে দাবি করা হয়।
এই চিঠিটি বহু আগেই বিভিন্ন সময় অনলাইনে ছদ্মনামে প্রচারিত হয়েছে। সেই কারণে শুরুতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাইনি। তবে একজন সংগঠনের নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে রুপ সিং চাকমা যখন নিজ পরিচয়ে বিষয়টি সামনে আনেন, তখন সেটিকে আর উপেক্ষা করার সুযোগ থাকে না।
২০০৫ সালে জনসংহতি সমিতির কাছে পেশ করা অভিযোগপত্রে মি. লারমার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও একাধিক নারীর সঙ্গে যৌনাচার সংক্রান্ত নানা বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। এসব ঘটনা যদি কেবল পারিবারিক পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকত, তাহলে তা ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে ধরা যেত। কিন্তু যখন একজন স্ত্রী এসব অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বামীর রাজনৈতিক সংগঠনের কাছে জানান, তখন সেটি আর নিছক পারিবারিক বিষয় থাকে না—তা রাজনৈতিক এবং সামাজিক গুরুত্বও বহন করে।
চিঠিটি কীভাবে জনসমক্ষে চলে এলো, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে ধারণা করা যায়, জনসংহতি সমিতি বিভক্ত হয়ে যখন জেএসএস (এম এন লারমা) নামে একটি পৃথক দল গঠিত হয়, তখন পরস্পরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান নিতে গিয়ে এই গোপন নথিটি প্রকাশিত হয়ে থাকতে পারে। তবে অতি গোপনীয় নথি কিভাবে জনসম্মুখে এসছে, তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হয়েছে?
এ অভিযোগের ভিত্তিতে সেই সময় জনসংহতি সমিতি অভিযুক্ত বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেয়নি, এমনকি কোনও তদন্তও হয়নি—এমন অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ করা যায়, জেএসএস-এর দুটি নারী অধিকারভিত্তিক সহযোগী সংগঠন রয়েছে—হিল উইমেন্স ফেডারেশন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি। প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কি কখনো এই বিষয়ে তাদের মাদার অর্গানাইজেশন, অর্থাৎ জেএসএস-এর কাছে জবাবদিহি চেয়েছে? প্রশ্নটা এই কারনেই নিজের ঘর যদি সাফ না থাকে, তখন অন্যের দিকে প্রশ্ন তোলা যায় না।
আর এখন যখন অভিযোগপত্রটি আবার নতুন করে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন জনসংহতি সমিতির পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল বক্তব্য রয়েছে কি?