সন্তু লারমা শুরু থেকেই নিজের নেতৃত্বে একটি একচেটিয়া আধিপত্য কায়েমের কৌশল হিসেবে প্রতিভাবান, উদ্ভাবনী, চিন্তাশীল এবং স্বাধীনচেতা নবীন প্রজন্ম ও সচেতন মানুষদের কার্যত দূরে সরিয়ে রেখে আসছেন। তার নেতৃত্বে বরং জায়গা করে নিয়েছে গন্ধমূর্খ, গরুচোর, বাটপার, ধোঁকাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সুবিধাবাদী একটি শ্রেণি, যাদের মাধ্যমে তিনি প্রকৃত যোগ্য, ন্যায়নিষ্ঠ এবং আদর্শবানদের দমন করে নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন।
এই কৌশলের উদ্দেশ্য অত্যন্ত সুস্পষ্ট—নিজের ক্ষমতা ও প্রভাব বলয়ে অটুট থাকা এবং নেতৃত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত রাখা। যোগ্যদের পিছনে ঠেলে অযোগ্যদের সামনে আনার মাধ্যমে তিনি একটি সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন, যেখানে প্রশ্নহীন আনুগত্য এবং তোষণই হয়ে উঠেছে নেতৃত্বের মানদণ্ড। সন্তু লারমার নেতৃত্বে বা নেতৃত্বাধীন জেএসএসে একজন প্রভাবশালী নেতা ও যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যাক্তি আছেন বলে মনে হয় না। সন্তু লারমার এক এক জন নেতাকর্মী উগ্রবাদী, বদমেজাজি, প্রতিহিংসা চরিতার্থ, প্রতিশোধ পরায়ন এবং স্বার্থবাদী।
বাস্তবতা হলো—সন্তু লারমা ১৯৯৭ সালে যে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, সেই চুক্তির বাস্তবায়ন কিংবা পাহাড়ি জনগণের সাংবিধানিক অধিকার ও জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের উদ্দেশ্যের প্রতি তার কোন প্রকৃত দায়বদ্ধতা নেই। এসব তিনি কেবল রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করেছেন, কিন্তু কখনোই এগুলোর সারবস্তু বাস্তবায়নের জন্য আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাননি।
আজকের প্রেক্ষাপটে এটি স্পষ্ট যে, তার নেতৃত্ব ব্যক্তি-গৌরব, ক্ষমতালিপ্সা ও একচেটিয়া আধিপত্য রক্ষার এক দীর্ঘ অভ্যাসেরই প্রতিফলন। এভাবে একটি আন্দোলন ও জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে তিনি কৌশলে পরিণত করেছেন নিছক এক নেতৃত্ব রক্ষার খেলায়।