জুম্ম জাতীয়তাবাদের নামে যারা প্রতিদিন চিৎকার করেন, জুম্ম জুম্ম বলে গলা ফাটান, সন্তু লারমার নাম শ্রদ্ধাভরে উচ্চারণ করে আবেগাপ্লুত হন, কখনও তাঁর নামে কাঁদেন, কখনও লুটিয়ে পড়েন—তাদের প্রতি একটি আন্তরিক অনুরোধ রইলো, একবার অন্তত ভেবে দেখুন, আপনি কী করছেন, কেন করছেন, এবং কার জন্য করছেন ?
আপনারা যে সন্তু লারমার নির্দেশে নিজের জীবন দিচ্ছেন, কারো প্রাণ নিচ্ছেন, গৃহযুদ্ধের পথে হাঁটছেন, সেই সন্তু লারমা কি আদৌ আপনাদের কথা ভাবেন ? এই প্রশ্ন করার সময় এসেছে আপনাদের মধ্যে।
স্মরণ করুন—সন্তু লারমার আপন বড় ভাই, মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা, যিনি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল জাতিসত্তার এক অভিন্ন স্বপ্নের রূপকার। তিনি এই ভূখণ্ডে একটি বহুসাংস্কৃতিক, ন্যায়ভিত্তিক, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম করেছিলেন, জীবন দিয়েছেন। অথচ সেই ভাইয়ের দেহাবশেষ পর্যন্ত সন্তু লারমা বিদেশের মাটিতে পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন ওঠে—যিনি আপন ভাইয়ের প্রতি এতটুকু দায়িত্বশীলতা দেখান না, তিনি কি সত্যিই আপনাদের আর জনগণের কথা ভাবতে পারেন ?
আজ সন্তু লারমা নিজের নামে, নিজের আদেশে ও নিজের সুবিধার্থে যে রাজনীতি করছেন, তা কীভাবে একটি জনগোষ্ঠীর মুক্তি কিংবা আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রাম হতে পারে ? তিনি কেবল নিজের অবস্থান ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সংগ্রামী আপনাদের জীবন ব্যবহারের পণ্যে পরিণত করেছেন।
একবার হিসাব করে দেখুন—গত কয়েক দশকে কত সহস্র নেতাকর্মী জীবন হারিয়েছেন, কত পরিবার ধ্বংস হয়েছে, কত মানুষ দুর্বিষহ যন্ত্রণায় দিন কাটাচ্ছেন। কত সন্তান হারা, কত বাপ হারা, কত মায়ের বুক খালি হয়েছে। অথচ সন্তু লারমা কী করেছেন ? কোনো আর্থিক সাহায্য, কোনো চিকিৎসা সহায়তা, কোনো রাজনৈতিক পুনর্বাসন কিংবা কোন রাজনৈতিক সমাধান—কিছুই তো দেখা যায়নি।
সন্তু লারমা আজ আর কোনো আদর্শের নাম নন। তিনি একটি স্বৈরতান্ত্রিক সাম্রাজ্যের শাসক, যাঁর ক্ষমতার ভিত্তি গড়ে উঠেছে সাধারণ মানুষের রক্ত, ঘাম আর বিসর্জনের উপর। যারা এখনো তাঁকে অন্ধ অনুসরণ করছেন, তাদের প্রতি আহ্বান—নিজেদের আত্মত্যাগকে মূল্য দিন। প্রশ্ন করুন, চিন্তা করুন, এবং বুঝে শুনে পথ বেছে নিন।