বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫-এর ডাক
প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার্থে সচেতন হোন!
সীমান্ত সড়ক নির্মাণের নামে বনাঞ্চল ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের বিরুদ্ধে র্যালি ও সমাবেশ করেছে
রামগড় পরিবেশ রক্ষা কমিটি।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন ২০২৫) সকাল ১০টার সময় ‘রামগড় টু ঢাকা সড়কে-বন ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি’র উদ্যেগে এই র্যালি ও সমাবেশ আয়োজন করা হয়। দাতারাম পাড়া রাস্তা মুখ থেকে র্যালি আকারে নিয়ে যৌথখামার বাজারে এসে তারা সমাবেশে মিলিত হয়। এতে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ অংশগ্রহণ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, তৈমাং ত্রিপুরা রামগড় সরকারি কলেজে সচেতন ছাত্র, নয়ন চাকমা ও ধনো ত্রিপুরা
বক্তারা বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে পাহাড়িদের ঘরবাড়ি ফসল উৎপাদনের ভূমি অন্যায়ভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে,সমতল থেকে এসে পাহাড়ে পর্যটন নাম করে সেখানকার স্থানীয় মানুষদের সুখ কেড়ে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ নারী ব্যবসা করা হয়।
বক্তারা আরো বলেন, ফ্যাসিবাদি স্বৈরাচার ক্ষমতা থাকাকালীন বান্দরবানে পাঁচ তারকা হোটেলের নাম দিয়ে গাছপালা বন উজার করে পরিবেশ ধ্বংস এবং পরিকল্পিতভাবে সেখানকার ভূমি দাতাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, যার কারণে একটু বৃষ্টি হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন “উন্নয়নের নামে বুলডোজার: ধনিরাম পাড়ার ধান্য জমি যেন তারই বৃত্তান্ত”
২০২১ সালের অক্টোবর মাস। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ধনিরাম পাড়ায় যখন ধানের শীষে সোনালি রঙ লেগেছে, তখনই হঠাৎ করেই গর্জে ওঠে উন্নয়নের বুলডোজার। সড়ক নির্মাণের অংশ হিসেবে ধানক্ষেতে চলতে থাকে সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের দৌরাত্ম্য। স্থানীয় কেউ জানে না, কার সঙ্গে আলাপ হয়েছে, কার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। জমির মালিকেরা বিস্ময়ে হতবাক—এই জমিতে তো আমাদের নাম খতিয়ানভুক্ত, হোল্ডিংভুক্ত, তাহলে কে দিল এই জমি দখলের অনুমতি? সীমান্ত সড়কের ফলে ধনিরাম পাড়া, লক্ষ্মীছড়া, যামিনী পাড়া, সাদিয়া বাড়ি অনেক পরিবার হারিয়েছে জমি, জুম পাহাড়, বাগান কত কী!!
রামগড় থেকে তানাক্কাপাড়া পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়কের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড এই কাজ শুরু করে। তবে স্থানীয়দের কেউ জানতো না যে, তাদের খাদ্য নিরাপত্তার একমাত্র অবলম্বন—ধান্য জমি, এভাবে একদিন হারিয়ে যাবে।
২০২৪ সালে এই এলাকায় বড় ধরনের বন্যায় কবলিত হয়।
এ উন্নয়ন যেন একতরফা বিজয় অভিযান, যেখানে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উপর যেন আর কোনো উন্নয়ন বুলডোজার না চলে। আমরা চাই অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হোক, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এ উন্নয়ন যেন হয় মানুষের জন্য, মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে—not তাদের পিষে দিয়ে।
বক্তৃতা আরো বলেন,পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে নান্যাচর-লংগদু সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলে আমাদের ওপর পরিবেশগত ঝুঁকি বাড়বে। অনেকের ফসলি জমি, গাছ, ভূমি ধ্বংস হবে,এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে সাধারণ জনগণের কোন উপকার হবে না। বরং এতে বন, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি হবে। কাজেই এই অবস্থায় বন, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য তথা সাধারণ জনগণ ও প্রাণীকুলের বাঁচার জন্য এই ক্ষতিকর অবিলম্বে নান্যাচর-লংগদু সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানাই।