জেএসএস এর দেশ বিদেশে জনসমর্থন এখন একেবারেই তলানিতে। খোদ তাদেরই এক বৃহৎ অংশ এখন সন্তু লারমার জেএসএস এর সংঘাত বিরোধী। তাই তারা দূরে সরে যাচ্ছেন, যেতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ এছাড়া আর তাদের কোন উপায় নেই। আমরা কোন দল করি, বা সমর্থন করি মূলত নিজের অস্তিত্ব, অধিকার ও কল্যানের জন্য। যে দল বা নেতাকে সমর্থন করতে গিয়ে সমাজ, দেশ, জাতির কল্যান দূরের কথা – খোদ নিজেরই অস্তিত্ব বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয় সে দল আত্মসচেতন কেউ করে না, করতে পারে না।
সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস এর কর্মকান্ডগুলো আত্মঘাতী হওয়ার কারণে ১৯৮৩ সাল থেকে দলটি কেবল ভেঙে গেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার একটি শক্তিশালী বিপ্লবী সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও দলটি এখন অস্তিত্ব সংকটের তলানিতে পৌঁছে গেছে।
ভুল রাজনৈতিক চিন্তা, চেতনা, আদর্শ, সুবিধাবাদ, ক্ষমতার অপব্যবহার লড়াই সংগ্রামের অর্থনীতি, রাজনীতি ও সামরিক কলাকৌশলগুলো জেএসএসকে নেতৃত্বহীনতার চরম সংকটে ফেলে দিয়েছে।
ভুল মত পথ দর্শন চিন্তাধারা জেএসএসকে কেবল নিজ দলের কর্মীসমর্থক সমাজ জাতির কাছে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেনি। অধিকন্তু, ভারতের কাছে চিরশত্রুতে পরিণত করেছে।
ভারতের আশ্রয়ে থেকে ভারত বিরোধী চক্রান্ত ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ায় এম এন লারমা থেকে শুরু করে আজকের সন্তু লারমাকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে, হচ্ছে। তারা এখন আর ভারতের মাটিতে পা ফেলবার স্থানও পাচ্ছে না। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
যাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে টিকে থাকার সংগ্রাম লড়াই করা তাদের বিরুদ্ধে গিয়ে শত্রুদের সাথে হাত মেলানো দুনিয়ার কেউ সমর্থন করে না, করতে পারে না। এজন্য জেএসএস পানছড়ি থেকে নির্মুল হলো! ভারত থেকে গ্রেফতার, বিতাড়িত হচ্ছে।
আপনি যদি আপন পরিবারের লোকদের শোষণ নির্যাতন দমন পীড়ন হত্যা অনিষ্ট করেন তবে কে আপনাকে ভালবাসবে? নিজের স্ত্রী পুত্ররা তো লাইক করে না।
এতদিন পানছড়িতে গনবিরোধী কাজ করতে গিয়ে তাই ৩ দিনের মাথায় জেএসএকে নির্মুল উচ্ছেদ হতে হলো। অথচ তারা সেখানে গিয়েছিল ইউপিডিএফকে নির্মুল উচ্ছেদ করতে! রাজনৈতিক ভাগ্যের পরিহাস কী ভয়ংকর দেখুন। মনে করি যে, সামনে সব ভয়ঙ্কর দিনগুলো অপেক্ষা করছে জেএসএস এর সামনে!
এখন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় ইউপিডিএফ নয়- জেএসএসই ভারতের অন্যতম শত্রুতে পরিণত হয়েছে। এমতাবস্থায়, ভারতের শত্রুতে পরিণত হওয়া জেএসএস এর পক্ষ যে নেবে সে ভারতের শত্রুতে পরিণত হবে।
আমার ধারণা ভারত আর এখন মোটেই অতীতের মতো নেই। এখন তাদের অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, যে তাদের শত্রু তাদের নিকেশ করে দেবে! সে ভারতীয় হোক কিংবা বিজাতীয় হোক! নিস্তার নেই।
জুম্মরা সাবধান! জেএসএস এর দিন ফুরিয়ে গেছে। এ ফুরিয়ে যাওয়া যতটা ইউপিডিএফের কারণে – তার চেয়ে বহুগুণে অধিক হলো তাদের ভারত বিরোধী ভূমিকার কারণে।
ছবিতে পানছড়ি যুদ্ধে আহত হয়ে ভারতে চিকিৎসারত জেএসএস সশস্ত্র কর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার হওয়া ২ জনের পরিচিতি জানা গেল। আন্তর্জাতিক রাজনীতি না বুঝে অন্ধের মতো যারতার সাথে, নেতৃত্বে লড়াই সংগ্রাম যুদ্ধ করতে গেলে অকালে এমন পরিণতি ভোগ করতে হয়।
জেএসএস কর্মী সমর্থকগণ প্রশ্ন করুক তাদের নেতাদের সন্তানরা কে কী করছে? কজন যুদ্ধ করছে!
জুম্মরা ঠিক করুক তারা ধংস হবে নাকি টিকে থাকবে? বার্মার আরাকান থেকে তাদের, চাকমাদের পালিয়ে আসতে বাধ্য হওয়ার ইতিহাস কিন্তু এখনও বেশি দিনের পুরনো নয়। ভারতের শত্রু হলে তারা কোথায় যাবে? আদৌ কোথাও যেতে পারবে কিনা ঠিক করুক। সময় কিন্তু আর হাতে নেই।
দুনিয়াতে টিকে থাকতে গেলে অবশ্যই অবশ্যই বাস্তববাদী হতে হবে। জ্ঞাতির ছায়া সুশীতল বলে এজন্য আমাকেও এত কথা লিখতে, বলতে হচ্ছে!