নাড়াইছড়ি, পার্বত্য চট্টগ্রাম — দীর্ঘদিন ধরে জেএসএস (সন্তু লারমা) সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর চাপে নীরবে সহ্য করে আসা নাড়াইছড়ি এলাকার সাধারণ মানুষ অবশেষে মুখ খুলতে শুরু করেছে। নির্যাতন, অনাচার ও জবরদস্তিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ এখন প্রতিবাদী মনোভাব দেখাচ্ছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, এলাকার সুন্দরী কিশোরী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের জেএসএস সন্তু বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার ভয়াবহ প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরে চলছে। মেয়েদের বয়স ও সম্মতি বিবেচনা না করে তাদের পরিবারকে হুমকি দিয়ে সন্তু বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ‘বিয়ে’ নামক সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করা হয়। অনেক সময় মেয়েটি নাবালিকা হওয়া সত্ত্বেও তাকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিতে বাধ্য হন অসহায় অভিভাবকরা।
একজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,
“আমার মেয়েটার বয়স এখনো ১৪ হয়নি, কিন্তু জেএসএসের একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে দেখে দাবী করে বসে। বলেছে, এই মেয়েটিকে তার বউ বানাতে হবে। আমি রাজি না হলে হুমকি এসেছে—পরিবারসহ গুম করে ফেলবে। আমরা কিছু বলতে পারি না।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই কৌশলের মাধ্যমে সন্তু বাহিনীর সন্ত্রাসীরা গ্রামের পর গ্রামে জোর করে আত্মীয়তার বন্ধনে জড়িয়ে আধিপত্য কায়েম করছে। সাধারণ মানুষ তাদেরকে ‘ঘরের জামাই’ হিসেবে দেখতে বাধ্য হলেও, কার্যত তারা গ্রামে অস্ত্রের জোরে এক প্রকার উপনিবেশ গড়ছে।
জনমনে আশার আলো গণমুক্তি ফৌজের আগমন
এই পরিস্থিতির মাঝে সাম্প্রতিককালে যখন গণমুক্তি ফৌজের সদস্যরা নাড়াইছড়ি এলাকায় উপস্থিত হন, তখন গ্রামবাসীরা তাদের স্বাগত জানিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। অনেকেই নিজ উদ্যোগে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করে, যা জনsentiment-এর একটি স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ বলে স্থানীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
একজন বয়স্ক গ্রামবাসী বলেন,
“আমরা অনেক দিন পর কারো কাছে নির্ভয়ে কথা বলতে পারলাম। গণমুক্তি ফৌজ এলে মনে হয় আমাদের পাশে কেউ আছে, যারা আমাদের কথা শুনবে, আমাদের রক্ষা করবে।”
নাড়াইছড়ি ও আশপাশের এলাকাগুলোতে জেএসএস সন্ত্রাসীদের আধিপত্য দিন দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠছিল। তাদের বর্বর কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে মেয়েদের নিয়ে চালানো অনৈতিক তৎপরতা, জনজীবনে চরম নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করেছে। এমন সময় গণমুক্তি ফৌজের আগমন যেন এক স্বস্তির পরশ এনে দিয়েছে।